স্টাফ রিপোর্ট:: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র নিলেন ঝুমন দাস। রোববার (৫ নভেম্বর) রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর কবীর খানের কাছ থেকে ঝুমন দাস মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি শাল্লা উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১২ ডিসেম্বর, আপিল ১৩-১৫ ডিসেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ১৮ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৯ ডিসেম্ব্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২০ ডিসেম্বর।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর ঝুমন দাস বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে এক প্রার্থীর হয়ে মাঠে কাজ করেছিলাম। তখন সাধারণ মানুষকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তবে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারিনি। কারণ, আমি চেয়ারম্যান ছিলাম না। তাই এবার নিজে চেয়ারম্যান হয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চাই। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর শাল্লা থানা পুলিশের এক অনুষ্ঠানে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন ঝুমন দাস। তবে কোনো রাজনৈতিক দল নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য রাখেন। ওই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস।
তিনি স্ট্যাটাসে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন। তবে এ সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় অপপ্রচার চালাতে থাকেন মামুনুলের অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পরেরদিন কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝুমন দাসের বাড়িসহ বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট করে। এরপর ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এই মামলায় কয়েক দফায় জামিন আবেদন খারিজের পর ঝুমন দাস হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।
পরে ২৩ সেপ্টেম্বর ঝুমনকে শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া আগামী এক বছরের জন্য নিজ জেলা সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেন না ঝুমন দাস।
হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
এবিএ/৬ ডিসেম্বর